আগে ভাঙো পরে গড়ো (৪র্থ পর্ব)
নামাজের অভ্যন্তরীণ রহস্য
নামাজের বাতেনি রহস্য কয়েকটি ভাগে আলোচনা করব।আল্লাহ তায়ালা এগুলো দ্বারা আমার এবং পাঠকদের উপকার দান করুন।উল্লেখ যোগ্য বিষয় হল এগুলো আমরা সবাই জানি।জানা কথাগুলোই বার বার আলোচনার দ্বারা অন্তর শক্তিশালী হয়।
নামাজের বাতেনি বিষয়গুলো কয়েকভাগে বিভক্ত
১।সওয়াব।
২।নেসবত।
৩। উচু মর্যাদা।
আমি এখন উক্ত তিন বিষয় নিয়ে ভাগে ভাগে আলোচনা করব, আল্লাহ তায়ালা ই তৌফিকদাতা
সওয়াব কি?
বলা বাহুল্য যে,অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন ব্যাক্তিদেরকে সওয়াব কি জিনিস তা বুঝাতে হয়না।গাধাদেরকে বুঝাতে হয়।আমি নিজেও একজন গাধা টাইপ ছিলাম,প্রাককালে।পরবর্তীতে ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহির কিমিয়া আমার জীবনের মোর ঘুরিয়ে দিয়েছে।
সওয়াবের আবিধানিক অর্থ কোনো কল্যান লাভ করা অথবা উপকৃত হওয়া।
নামাজে সওয়াব বা কল্যান আছে।
দুনিয়াবি এবং আখিরাতের উভয়ের কল্যান নামাজে নিহিত রহিয়াছে।যদিও নামাজি ব্যাক্তি কল্যানের দুনিয়াবি দিকটির নিয়ত করেনা, নিয়ত না করলেও পেয়ে যায়।যেমন মানুষ সাধারনত পেট ভরার নিয়তেই খাবার গ্রহন করে,কিন্তু সাথে সাথে কিছু জিবে মজাও পেয়ে যায়।
এখন আমি নামাজের দুনিয়াবি কল্যান নিয়ে আলোচনা করব---
১।সত্যিকার নামাজির প্রতি মানুষের ভক্তি শ্রদ্ধা থাকে, তার প্রতি ভালবাসা এবং আযমত পয়দা হয়।
২।নামাজি ব্যাক্তির জুরুরি সব কাজ গায়েবী ভাবে সমাধান হয়ে যায়।যদিও বিভিন্ন পরিক্ষা আসে।কিন্তু তার ভিতরেও কল্যানই কল্যান নিহিত থাকে।
৩।নামাজি ব্যাক্তি দুনিয়াতেও আল্লাহর সাথে বিশেষ সম্পর্কের অধিকারি হয়,আল্লাহর পক্ষ থেকে তার অন্তরে কি এলহাম হচ্ছে সে তা বুজতে পারে,এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে,ফলে দুনিয়াবি অধিকাংশ ফেতনা থেকে সে বেচে যায়।যদিও প্রচুর পরিক্ষা নিরিক্ষা নামাজির সামনে আসে,তারপরও সে শান্তিতেই থাকে আল্লাহর সাথে বিশেষ সম্পর্কের কারনে।
৪।নামাজি ব্যাক্তি দুনিয়াতেও চিন্তা টেনশন ফ্রি থাকে,যদিও বায্যিকভাবে মনে হয় কতইনা বিপদে আক্রান্ত, কিন্তু অভ্যান্তরিন ভাবে সে অনাবিল সুখ শান্তিতে নিমজ্জিত থাকে।
৫।নামাজি ব্যাক্তির দুনিয়াতে থাকতেই আখিরাতের দিকে অন্তর্দৃষ্টি খুলে যায়।সে যখন কোনো নেক আমল করে,বুজতে পারে এর দ্বারা আমি আখিরাতে কি পেতে পারি।
৬।নামাজ অশ্লীলতা, বেহায়াপনা,অকাম -কুকাম থেকে বিরত রাখে,বা বাধা দেয়।এখন আমাদের নামাজ বাঁধা দেয়না এর কারন হল আমরা মূলত নামাজই পড়িনা।
সওয়াবের দ্বিতীয় অংশ
আখিরাতে উপকার লাভ করা
মূলত নামাজি ব্যাক্তির উদ্দেশ্য এটাই থাকে।আখিরাত চিরদিনের কিন্তু দুনিয়া দুইদিনের।এজন্য নামাজি ব্যাক্তি আখিরাতের জন্যই আমল করে।
নামাজের দ্বারা আখিরাতে কি কি উপকার পাওয়া যায়?
কবর থেকে শুরু করি।যেহেতু নামাজি ব্যাক্তি বেশি হোক কম হোক আরিফ হয়ে থাকে।প্রত্যেক নামাজি ব্যাক্তিই আরিফ, যদিও মারেফতের পরিমান কম হোকনা কেন,আমরা প্রত্যেক নামাজিই ছোট খাট একেকজন আরিফ।যদিও ইমাম গাজ্জালী, বড়পীর জীলানি,মাওলানা রুমি,হুসাইন মনসূরের মত বড় আরিফ নই।উল্লেখ্য যে আরিফরা,তার নিজস্ব জ্ঞান পরিমন্ডলে পরিভ্রমণ করতে থাকে।দুনিয়া আখিরাতের অনেককিছুই তার অন্তর্দৃষ্টির সামনে উদ্ভাসিত থাকে।সে যেখানেই থাকুকনা কেন সে তার জ্ঞান রাজ্যে ভ্রমন করতে থাকে।সে কবরে থাকুক,হাশরের মাঠে থাকুক,মিজানে থাকুক,অথবা পুলসিরাতের উপর থাকুক,অথবা জান্নাতে থাকুক,দোযখে থাকুক,অথবা দুনিয়ার কোথাও থাকুক সে সর্বদা মহান আল্লাহ তায়ালার সৌন্দর্য অবলোকনে বিভোর হয়ে থাকে।কূলহীন অকূল সুমুদ্রে সাঁতার কাটতে থাকে।
Comments
Post a Comment