চূড়ান্ত সফলতার ডাক:২য় পর্ব (তওবা: আত্মমর্যাদা)

 আত্ম মর্যাদা কি?

উত্তর:আত্মমর্যাদা হলো অপমানের বিপরিত একটি জিনিস।নিজেকে অপদস্ত অপমানিত করা হলে আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়।এই আত্মমর্যাদার কারনেই প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য যাবতীয় গুনাহের কাজ হারাম।

আত্মমর্যাদা কি কম বেশি হয়?

উত্তর:হ্যা।আত্মমর্যাদা কম বা বেশি হয়।এর মান ০% থেকে ১০০%এর ভিতরে থাকে।মানব জাতীর মধ্যে যার মর্যাদা যত বেশি তার আত্মমর্যাদা তত বেশি।এই হিসাবে আল্লাহর রসূলদের আত্মমর্যাদা সবচেয়েে বেশি।

তারপর তাকওয়া অনুযায়ী আত্মমর্যাদা কমবেশি হয়ে থাকে।

বর্তমান পৃথিবীতে আফগানরা তাকওয়াবান হিসেবে সুপরিচিত।এজন্য তাদের আত্মমর্যাদাও অন্যদের থেকে বেশি।

আত্মমর্যাদা একটি ভালো এবং উত্তম গুন,কিন্তু অহংকার করা একটি খারাব গুন।

পশুদের মধ্যে কি কোনো আত্মমর্যাদা আছে?

উত্তর:না।পশুদের মধ্যে কোনো আত্মমর্যাদা নেই।আত্মমর্যাদা মানুষ এবং পশুকে আলাদা করেছে।

আত্মমর্যাদা কি আত্মিক গুণ নাকি শারিরীক কোনো জিনিস?

উত্তর:আত্মমর্যাদা একটি আত্মিক গুণ।এটা শরীরের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।যার আত্মা যতবেশি জাগ্রত এবং শক্তিশালী তার আত্মমর্যাদা তত বেশি।

প্রশ্ন:যদি কেউ কারো আত্মমর্যাদায় আঘাত দেয়, তাহলে কেয়ামতের দিন এর বিচার কিভাবে হবে।অনুরুপ আত্মঘাত নাকি অন্যকিছু?

উত্তর:এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন।আমি আমার মতো করে উক্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি।

কুরআন হাদিস থেকে জানা যায়,কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে প্রত্যেকের প্রাপ্য হক বুঝিয়ে দেওয়া হবে।এমনকি শিং বিহীন একটি ছাগলকে শিংওয়ালা একটি ছাগল গুতা দিয়েছিলো,এটাও শিং ওয়ালা ছাগল থেকে উসুল করা হবে।

তাহলে কেউ যদি কারো স্ত্রীর সাথে যিনাহ করে, এটাও উসুল করে দেওয়া হবে,নেকি দিয়ে হোক অথবা অন্যকোনো ভাবে হোক।

কেউ যদি পরনারীর প্রতি কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করে,নিয়ম অনুযায়ী এটারও বিচার করা হবে,নেকি দিয়ে হোক অথবা অন্যকোনোভাবে।

উদাহরন সরুপ আপনি একটি মেয়ের প্রতি কুদৃষ্টি দিলেন,তাহলে আপনি কতজন মানুষকে কি পরিমান আঘাত দিলেন এটা ওজন করা হবে,সেই পরিমান নেই,আপনার আমলনামাহ থেকে কেটে যাদেরকে আঘাত দিয়েছেন তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হবে।সাধারনত একটা মেয়ের দিকে কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করলে কয়েকজন মানুষ আঘাত প্রাপ্ত হয়,মেয়েটার পিতা মাতা,ভাই,এবং মেয়েটার স্বামী।এবং আঘাতের পরিমান  তাকওয়া অনুপাতে কম বা বেশি হয়ে থাকে,সেভাবে হিসাব করেই নেকি দিয়ে দেওয়া হতে পারে।

প্রশ্ন:আমি একটি মেয়ের প্রতি কুদৃষ্টি দিয়ে,মেয়েটার সাথে সম্পৃক্তদেরকে গুপ্ত আঘাত দিয়েছি,অথবা কোনো একটি মেয়েকে নিয়ে কুচিন্তা করে, কাউকে গুপ্ত আগাত হেনেছি।নিয়ম অনুযায়ী আমার নেকি কেটে যাদেরকে আঘাত দিয়েছি তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হবে।কিন্তু প্রশ্ন হলো আমার তো কোনো নেকিই নেই সেক্ষেত্রে কি করা হবে?

উত্তর:এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন।হাদিস থেকে এবিষয়ে যা জানা যায়—হক দিতে দিতে যদি নেকি ফুরিয়ে যায়, তাহলে পাওনাদারের গুনাহ দেনাদারের ঘারে চাপিয়ে দেওয়া হবে।অর্থাৎ গুনাহের বোঝা হালকা করে দেওয়া হবে আঘাতপ্রাপ্ত লোকের।

প্রশ্ন:আমি একজনকে আঘাত দিয়েছি।যাকে আঘাত দিয়েছি তার কোনো গুনাহ নেই,আমারও তাকে দেওয়ার মতো কোনো নেকি নেই,হক দিতে দিতে নেকি শূণ্য হয়ে গিয়েছি,সেক্ষেত্রে কি করা হবে?

উত্তর:আসলে গুনাহ ছাড়া কোনো মানুষ হতে পারে না।সবারই কিছুনা কিছু গুনাহ আছে।

কিন্তু যদি এমন হয়েই যায়,তখন হয়ত আল্লাহ তায়ালা কোনো ব্যাবস্তা করে দিবেন।আঘাত প্রাপ্ত ব্যাক্তিকে তার পাওনা হক আপনাকে দিতেই হবে যেভাবেই হোক।

প্রশ্ন:তাহলে তো বিষয়টা খুবই ভয়ংকর।হাহাকার লেগে যাবে কেয়ামতের দিন,কারন এমন কোন ব্যাক্তি আছে যে কাউকে কোনো কষ্ট দেয় নাই।হয়ত কথার দ্বারা কষ্ট দিয়েছে,অথবা আত্মমর্যাদায় আঘাত হেনেছে! 

উত্তর:কুরআন মাজিদে অনেকবার অনেক জায়গায় বলা হয়েছে কেয়ামতের দিনটা হবে খুবই কঠিন দিন।এদিন শিশুও ভয়ের চোটে বৃদ্ধ হয়ে যাবে।সন্তান তার পিতামাতা থেকে দৌড়ে পালাবে।পিতা যদি সন্তানের কাছে সাহায্যের জন্য আসে,সন্তান বলবে আমার কোনো পিতা ছিলোনা পৃথিবীতে,আমি নিজেই আজ বড় বিপদে আছি জানিনা আমার কি ফয়সালা আসে।

মোটকথা খুবই ভয়ংকর একটা দিন হবে কেয়ামতের দিনটা।

A

Share on Google Plus

About হৃদয়ের প্রশান্তি

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.